অরুনদয়ের অগ্নিশিখা

শহীদ দিবস (মার্চ ২০১৮)

Aritro Jolodhi
  • 0
  • ৪২
দৃশ্য-১
গানঃ আমি বাংলায় গান গাই
(২০ এ ফেব্রুয়ারী, রাস্ত ঘাটের সব দোকান পাঠ সব বন্ধ, সকালে আদেশ হয়েছে কাল ১৪৪ ধারা তাই এখনই সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে কেউই ঝামেলা অংশ হতে চায় না। আবার শুনা গেছে ঢাকা বিশ্ববদ্যালয়ের ছাত্ররা এক আন্দোলনের ডাক দিয়েছে, এর মধ্যেই এক রিক্সা চালক কিছু রোজগারের আশায় রিক্সা নিয়ে বের হয়েছে)
রিক্সা চালকঃহুনলাম কাইল সকাল-সন্ধ্যা আন্দোলন। এ হল পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা এমনেই সময় ভাল চলতাসে না, তারউপর এই শিক্ষিত পোলাপাইনগুলান খালি ঝামেলা করে। রাস্তায় দেখা যাচ্ছে একটি লোক বুঝি না ঝামেলার সময় লোকগুলা ক্যান যে বের হয় না। দেখি যদি ব্যাটায় যায়,
(একটু দূরে একটি লোককে দেখা যাচ্ছে বড় চুল- দাড়ি, চোখে চশমা, গায়র কুঁচকে যাওয়া একটা পাঞ্জাবী পায়ের দিকে স্যান্ডেল। পাশে যেয়ে রিক্সা ওয়লা রিক্সা থামাবে)
রি.চাঃ(লোকটাকে উদ্দেশ্য করে) মামা, কুন যায়গায় যাইবেন।
লোক নির্বাক
রি.চাঃ যাইবেন না কইলেই হয়, কিছু না কওয়ার মানে কি, রিক্স চালাই দেইখা সম্মান নাই নাকি, অ্যাঁ।
লোকঃ বলো, কোথায় নিবা। সব যায়গা তো বন্ধ।
রি.চা এবার লোকটার দিকে ভাল করে তাকাল,
রি.চাঃ মামা, কি ইস্টুডেন্ট নাকি?
লোক উদাস ভাবে রিক্সা ওয়ালার দিকে তাকাল
রি.চাঃ না দেইখা মনে অইলো তাই কইলাম।
লোক বিড় বিড় করবে । তাঁর মাঝে ছাত্র আর ঝামেলা কথাটা ভাল মত শুনা যাবে।
রি.চাঃ (ঘাম মুছতে মুছতে) হ, মামায় ঠিক কইসেন এই ছাত্রগুলায় সব ঝামেলা করে হুদাই আন্দোলন করব। চুপচাপ পড়াহোনা কর না আন্দোলন না করলে মনে হয় পেটের ভাত হজম না এগো। মামা, করেন কি আপনে?
লোকঃ আমি লেখি। কবিতা লেখি।
রি.চাঃ ওহ।
(বলে রিক্সায় প্যাডেল মেরে চলে গেল। কবি রাস্তায় অস্থির ভাবে পায়চারী করতে লাগল। উচ্চারিত হবে,
“উদয়ের পথে শুনি কার বানী
ভয় নাই ওরে ভয় নাই
নিঃশেষ প্রান যে করিবে দান
ক্ষয় নেই তাঁর ক্ষয় নেই”
দৃশ্য-২
(একটি ঘর, চেয়ারে বা সোফায় একটি মধ্যবয়স্ক লোক বসে আছে। তাঁর সমানে দিয়ে একটি ছেলে হেটে ঘর থেকে বের হতে যাবে।
লোকঃ অমর।
ছেলেঃ হ্যাঁ, বাবা বল,
বাবাঃ কোথায় যাচ্ছ?
অমরঃ ইউনিভার্সিটি বাবা,
বাবাঃ ক্লাস আছে?
অমরঃ না, বাবা আজ খুব ব্যাস্ততা কাল আমাদের দাবির জন্য আন্দোলন। অনেক কাজ বাবা যাই।
(বলে দ্রুত ঘর হতে বের হয়ে যাবে)
বাবাঃ (চিন্তিত) এবারও প্রোমনশনটা মনে হচ্ছে হবে না, পুলিশের ছেলে যখন নিজেই আইন ভঙ্গ করে তখন সেই পুলিশের প্রোমশন হয় কিভাবে। চাকরী নিয়েই না টানা টানি পড়ে।
দৃশ্য-৩
(বড় একটা মাঠ ১০-১২ ছাত্র-ছাত্রী জড় হয়ে আছে। দূরে একজন ছাত্র চোঙা নিয়ে কথা বলছে)
চোঙা ওয়লা ছেলেঃ(চিৎকার করে) পাকিস্তান সরকার, আমাদের রাষ্ট্র ভাষা উর্দু করতে চায়, যদিও এই মাটির মানুষের ভাষা বাংলা জনগন ওপার থেকে দ্বিগুন। ওরা আমাদের মুখের ভাষা জোড় করে কেড়ে নিতে চায়, আমাদের প্রানের ভাষাকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে চায়। কিন্তু আমরা মাথা নোয়াতে জানি না, মাথা নোয়াব না। আমরা আমাদের ভাষাকে কেড়ে নিতে দিব না, আমরা রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই। সেই দাবিতে কাল আমরা কারফিউয়ের মধ্যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছি, সবাই আগামী কাল আন্দোলনে যোগ দিব।
(১০-১২ জন ছাত্র ছাত্রী যে বসে ছিল তাঁদের মধ্যে কথা হচ্ছে)
সাদিয়াঃ কাল নাকি সবাইকে আন্দোলনে যোগ দিতে হবে।
নন্দাঃ এইসব আন্দোলন ফান্দোলনের মধ্যে আমি নাই, বাবা জানলে হাড্ডি গুড্ডি আস্ত রাখবে না।
অমরঃ আন্দোলনতে যোগ দিতেই হবে, এমনে এমনে তো আর চলতে দেয়া চলে না।
রাকিবঃ হুম, উর্দু ভাষায় আর কত। অন্তত এই ভাগে বাংলা চলুক। যা হবার হবে কাল আমাদের আন্দোলনের সাথে থাকতেই হবে
আসিফঃ অমর, তোর বাবা তো পুলিশ কালকের কি হবে কিছু জানিস।
অমরঃ না, যাই হোক এই আন্দোলনে আমি যাব। যদি কাল ফিরে না আসি মনে রাখবি......
(আসে পাশ গান আর কথায় অমরের কথা আর শোনা যাবে না)
গানঃ ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়
(অন্যকোথাও একটা ঘরের মধ্যে কয়েকজন লোক কথা বলছে)
১ম জনঃ তোমাদের এইখানে ডেকেছি খুব বড় একটা দায়িত্ব দেবার জন্য।
২য় জনঃ কি কাজ স্যার?
১ম জনঃ কাল তো কারফিউ দিয়েছে , তথ্য মিলেছে ছাত্ররা আন্দোলন করবে। উপর মহল থেকে আদেশ এসেছে যেভাবেই হোক এই আন্দোলন রুখতে হবে।
৩য় জনঃ রুখতে হবে মানে স্যার বুঝলাম না।
১ম জনঃBy any means necessary, লাঠি থেকে শুরু করে গুলি পর্যন্ত।
৩য় জনঃ গুলি স্যার! ছাত্র স্যার!
১ম জনঃ Do you have any problem with that. আপনার তো প্রোমশন আটকে আছে। আপনি কি চান চাকরী টাও যাক। is everything Clear? Dismiss
সবাইঃYes, sir.
(সবাই একে একে বের হয়ে যাবে)
দৃশ্য-৪/ শেষ দৃশ্য
রাস্তায় মিছিলে স্লোগান হচ্ছে,
সবাইঃ রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই। উর্দু ভাষা আর নয়। আমার মাটিতে আমার ভাষা।
১ম পুলিশঃ কুইক ফায়ার।
(গুলির শব্দ)
অমরঃ রাষ্ট্র ভাষা.................. যেদিন আমি ফিরব না সেদিন মনে রেখ আমি মরি না আমি মরব না।
গানঃ আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

০৯ জানুয়ারী - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪